শেখ সাখাওয়াত হোসেন পাবনা (জেলা) প্রতিনিধি: শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। পাঁচ দিনের এ আনন্দ আয়োজনের সকল প্রস্তুতি নিয়ে শুরু হয়েছে পূজা। ভক্তদের ভালোবাসায়, দেবী দুর্গা সেজে উঠেছেন আপন মহিমায়। শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে পাঁচ দিনের দুর্গোৎসবে মেতেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। মনের মাঝে আশা দুর্গা তাদের জন্য নিয়ে আসবেন অনাবিল শান্তি। শারদীয় দুর্গাপূজায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ১৯টি পূজা মন্ডপে আনসার-ভিডিপির ১১৪ জন সদস্য-সদস্যা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের উপজেলা প্রশিক্ষক পুরুষ (টিআই) সামিউল ইসলাম রবিবার (২ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের ডিউটি পরিদর্শন করেন এবং বাহিনীর পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানান। মটরসাইকেল যোগে সামিউল ইসলাম কে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে সার্বিক সহযোগিতা করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার কোম্পানী কমান্ডার শেখ সাখাওয়াত হোসেন (বি.এ)।
শুভেচ্ছাকালে টিআই সামিউল ইসলাম স্থানীয় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দদের বলেন, ভাঙ্গুড়ায় উৎসমুখর পরিবেশে পূজা উদযাপিত হচ্ছে। পূজা মন্ডপের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন বলে তিনি জানান।
বিভিন্ন মন্ডপ পরিদর্শনকালে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষক পুরুষ (টিআই) সামিউল ইসলাম আরো জানান, পূজা চলাকালীন সময়ে যে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এবং যেকোনো ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসার মমতাজ মহল জানান, উপজেলার ১৯টি পূজা মণ্ডপের নিরাপত্তায় ৭৬ জন পুরুষ, ৩৮জন মহিলাসহ সর্বমোট ১১৪ জন আনসার ও ভিডিপির সদস্য-সদস্যা দায়িত্ব পালন করছেন। অধিক গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপে-৮জন, গুরুত্বপূর্ণ পূজা মন্ডপে-৬জন এবং সাধারণ পূজা মণ্ডপে-৪জন করে ডিউটি পালন করছে।
মমতাজ মহল আরো বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী পাবনার জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মুজিবুল হক স্যারের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট সকলকে তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের জন্য বলা হয়েছে।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মলয় কুমার দেব বলেন, উপজেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া বড়াল ও গুমানি নদী উপজেলার গ্রাম অঞ্চলকে দিয়েছে নৈস্বর্গিক রুপ। জেলার যেকোনো উপজেলার চেয়ে এই উপজেলায় মানুষের মধ্যে হানাহানি সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে অনেক কম।
এ কারণে ভাঙ্গুড়া উপজেলার মানুষ বসবাসের ক্ষেত্রে জেলার সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ উপজেলা বলে জেলার সর্বমহলে স্বীকৃত। তাই বরাবরের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্ন করতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম জানান, পূজা মন্ডপগুলিতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ, আনসার ও ভিডিপির সদস্য-সদস্যা, উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুল হাসান বিপ্লবের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক টিমসহ টহল পুলিশের পাশাপাশি থানা থেকে সার্বক্ষণিক ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরাগুলো পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান দৈনিক প্রত্যয় কে জানান, ‘এ বছর উপজেলায় ১৯টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উৎসব পালনে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।’